মঙ্গলবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
মঙ্গলবার, কোনো কারেকশন বা পুলব্যাক ছাড়াই EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত ছিল। কয়েকদিন ধরে, ইউরো 1.0804 এবং 1.0888 লেভেলের মধ্যে ট্রেড করছিল, এরপর পুনরায় এটির মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়। পূর্ববর্তী প্রবণতার মতোই এই মুভমেন্টের পেছনে কোনো উল্লেখযোগ্য সামষ্টিক অর্থনৈতিক কারণ ছিল না। ওই দিন প্রকাশিত একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন ছিল মার্কিন JOLTs চাকরির সুযোগ সম্পর্কিত প্রতিবেদন, যেটির ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে সামান্য ভালো ছিল। তবে, এটি ডলারের পারফরম্যান্সকে প্রভাবিত করেনি, কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডার উপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। বিশেষভাবে, তিনি বিদ্যমান শুল্ক আরও সম্প্রসারিত করেন, ধারণা করা হচ্ছে ৫১তম মার্কিন অঙ্গরাজ্য হিসেবে কানাডার যোগদানে অনীহার প্রতিক্রিয়া হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আমদানিকৃত স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের শুল্ক দ্বিগুণ করা হয়, এবং মার্কেটের ট্রেডাররা ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের প্রতি স্পষ্ট প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
মঙ্গলবার, পাঁচ-মিনিটের টাইমফ্রেমে বেশ কয়েকটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। 1.0845-1.0851 লেভেলের আশেপাশের প্রথম সেল সিগন্যালটি ভুল প্রমাণিত হয়। তবে, একই রেঞ্জ থেকে পরবর্তী বাই সিগন্যালটি ট্রেডারদের বেশ ভালো মুনাফা অর্জনের সুযোগ করে দেয়। আরও তিনটি বাই সিগন্যাল গঠিত হয়, যা নতুন ট্রেডারদের সহজেই লং পজিশন হোল্ড করে রাখার সুযোগ দেয়। শেষ পর্যন্ত, এই পেয়ারের মূল্য 1.0940-1.0952 জোনে পৌঁছে সেখান থেকে রিবাউন্ড করে, যা লং পজিশন ক্লোজ এবং শর্ট পজিশন ওপেন করার জন্য একটি আদর্শ এন্ট্রি পয়েন্ট প্রদান করে।
বুধবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, এখনও মধ্যমেয়াদে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে, যদিও তা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা কমছে। মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট মার্কিন ডলারের অনুকূলে বেশি কাজ করছে, তাই আমরা এখনও এই পেয়ারের দরপতনের প্রত্যাশা করছি। তবে, ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রতিদিনের সিদ্ধান্ত ও বক্তব্যের মাধ্যমে ডলারকে দুর্বল করে চলেছেন। বর্তমানে, মৌলিক অর্থনীতি ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক কারণগুলো রাজনীতি ও ভূরাজনীতির কারণে ছাপিয়ে যাচ্ছে।
বুধবার, ইউরোর মূল্য যেকোনো দিকেই মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে, কারণ এখন মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক কারণগুলো ধারাবাহিকভাবে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টকে প্রভাবিত করছে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি প্রতিবেদন গুরুত্বপূর্ণ, তবে ট্রাম্পের পদক্ষেপ আরও বেশি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলছে।
পাঁচ-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচ্য লেভেলগুলো হলো: 1.0433-1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0845-1.0851, 1.0888-1.0896, 1.0940-1.0952, 1.1011, 1.1048। আজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফেব্রুয়ারির মার্কিন মূল্যস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, এবং দেড় সপ্তাহ আগেও আমরা এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন হিসেবে বিবেচনা করতাম। তবে, এখন এটি প্রায় গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে, কারণ মার্কেটের ট্রেডাররা শুধুমাত্র ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত ও ঘোষণার উপর প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শুন পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।