বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বুধবার, EUR/USD কারেজন্সি পেয়ারের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের জন্য নতুন ভিত্তি স্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এটি আশ্চর্যের কিছু নয়, কারণ ট্রেডাররা মূলত ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পর্কিত সংবাদ—বিশেষ করে নতুন শুল্ক সংক্রান্ত ঘোষণাগুলোর প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। তবে, তারা সাধারণত এই শুল্ক বিলম্ব বা বাতিল হওয়া সংক্রান্ত খবর উপেক্ষা করছে।
বাস্তবিক অর্থে, এই ধরনের পরিস্থিতি পরিলক্ষিত হচ্ছে: যখন ট্রাম্প নতুন করে আমদানি শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেন, তখন ডলার দুর্বল হয়ে পড়ে; বিপরীতে, যখন তিনি এই শুল্কগুলো স্থগিত করেন বা বাতিল করেন, তখন ডলার সাধারণত পুনরুদ্ধার করে না। তাই, আমরা মনে করছি যে ডলারের বর্তমান দরপতন পুরোপুরি যৌক্তিক নয়। মার্কেটের ট্রেডাররা গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক কারণগুলো উপেক্ষা করছে এবং এমনভাবে আচরণ করছে যেন ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার শূন্যে নামিয়ে এনেছে এবং মার্কিন অর্থনীতি ইতোমধ্যে মন্দার মধ্যে রয়েছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
বুধবার, ৫-মিনিট টাইমফ্রেমে দুটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। প্রথমত, মূল্য 1.0888-1.0896 এর রেঞ্জ থেকে বাউন্স করে মাত্র 20 পিপস বৃদ্ধি পায়, যা ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করার জন্য যথেষ্ট ছিল এবং এর ফলে এই ট্রেড ক্লোজ হয়ে যায়। এরপর, একই রেঞ্জ থেকে আরেকটি সামান্য রিবাউন্ড ঘটে, এবং আবারও মূল্য প্রত্যাশিত দিকনির্দেশে 20 পিপস বৃদ্ধি পায়।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, মধ্যমেয়াদে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে, যদিও তা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা কমছে।। যেহেতু মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনো ইউরোর তুলনায় মার্কিন ডলারকে বেশি সমর্থন করছে, আমরা এখনো এই পেয়ারের দরপতনের প্রত্যাশা করছি। তবে, ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত ও বিবৃতি নিয়মিতভাবে ডলারের মূল্যকে নিম্নমুখী রাখতে সাহায্য করছে। বর্তমানে, রাজনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক কারণগুলো মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের তুলনায় বেশি প্রভাব বিস্তার করছে।
বৃহস্পতিবার, ইউরোর মূল্য যেকোনো দিকেই যেতে পারে, কারণ বর্তমানে মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক কারণগুলো এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টের উপর ধারাবাহিকভাবে প্রভাব ফেলছে না। মার্কেটের ট্রেডাররা কার্যত গতকালের মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের ফলাফলের প্রতি কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ার ট্রেডিংয়ের জন্য প্রাসঙ্গিক লেভেলগুলো হলো 1.0433-1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0845-1.0851, 1.0888-1.0896, 1.0940-1.0952, 1.1011 এবং 1.1048। বৃহস্পতিবার, সামষ্টিক অর্থনৈতিক পটভূমির কোনো প্রভাব থাকবে না। মার্কেটের ট্রেডাররা ইউরোজোনের শিল্প উৎপাদন বা মার্কিন উৎপাদক মূল্য সূচকের চেয়েও আরও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনগুলো উপেক্ষা করেছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শুন পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।