মঙ্গলবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
মঙ্গলবার, EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্য আবারও ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার প্রবণতা দেখিয়েছে। দৈনিক মুভমেন্ট বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে যে, এই পেয়ারের মূল্য প্রথমে বৃদ্ধি পেয়েছে, তারপর হ্রাস পেয়েছে, এবং পরবর্তীতে আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই তিনটি মুভমেন্টের মধ্যে দুটি মুভমেন্ট সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল, কারণ ইউরোজোন এবং জার্মানির ZEW সূচকের ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে ইতিবাচক ছিল, পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ফলাফলও প্রত্যাশার চেয়ে শক্তিশালী ছিল। তবে, সর্বশেষ ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক উপাদানগুলোর দ্বারা সমর্থিত ছিল না, যা মূল্যের বর্তমান প্রবণতার একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা তুলে ধরে। মার্কেটের ট্রেডাররা হয়তো সম্পূর্ণরূপে আসন্ন প্রতিবেদনের ফলাফল উপেক্ষা করছে এবং ডলার বিক্রি করছে, অথবা প্রতিবেদনের প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে এবং পরে আবার ডলার বিক্রি করছে। ফলস্বরূপ, এই পেয়ারের মূল্যের বর্তমান প্রবণতাকে যৌক্তিক বলে বিবেচনা করা যাচ্ছে না।
তবে, এর মানে এই নয় যে বর্তমানে ট্রেডিং করা অসম্ভব। বর্তমানে মূল্যের মুভমেন্টের ধরন বোঝা দরকার। ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখনো অক্ষুণ্ণ রয়েছে, তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের গৃহীত নীতিমালার কারণে মার্কিন ডলার দুর্বল হচ্ছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে মঙ্গলবার, তিনটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। প্রথমে, এই পেয়ারের মূল্য 1.0940-1.0952 রেঞ্জ থেকে বাউন্স করে এবং 1.0896 লেভেলে পৌঁছে, যা লাভজনক ট্রেড ছিল। এরপর, 1.0888-1.0896 এরিয়ায় আরও দুটি বাউন্স হয় এবং সন্ধ্যার মধ্যে মূল্য 1.0940-1.0952 রেঞ্জে ফিরে আসে। ফলে, নতুন ট্রেডাররা দুটি ট্রেড ওপেন করতে পারতেন, যার প্রতিটি ট্রেড থেকে প্রায় ২৫ পিপস লাভ করা যেতে পারত।
বুধবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, এখনো মধ্যমেয়াদে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে, তবে এই প্রবণতা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা কমছে। যেহেতু মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক পটভূমি এখনো ইউরোর তুলনায় মার্কিন ডলারকে বেশি সমর্থন করছে, আমরা এখনও এই পেয়ারের দরপতনের প্রত্যাশা করছি। তবে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত ও বৈশ্বিক নীতিমালা সংক্রান্ত ঘোষণা মার্কিন ডলারের মূল্যকে অব্যাহতভাবে নিম্নমুখী করছে। ফলস্বরূপ, মার্কেটে মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক উপাদানগুলোর চেয়ে রাজনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক প্রভাব বেশি পড়ছে, যার ফলে ডলারের দরপতন অব্যাহত রয়েছে।
বুধবার, ইউরোর মূল্য যেকোনো দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে, কারণ মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক উপাদানগুলো বর্তমানে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টকে ধারাবাহিকভাবে প্রভাবিত করছে না। ফলে, 1.0940-1.0952 এরিয়ার কাছাকাছি থেকে এখনও ট্রেডিং করা যেতে পারে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমের গুরুত্বপূর্ণ লেভেলসমূহ: 1.0433-1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0845-1.0851, 1.0888-1.0896, 1.0940-1.0952, 1.1011, 1.1048। বুধবার, ইউরোজোনে ফেব্রুয়ারির মুদ্রাস্ফীতির দ্বিতীয় অনুমান প্রকাশিত হবে, তবে এটি মার্কেটে উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে বলে মনে হচ্ছে না। তবে, সন্ধ্যার দিকে ফেডারেল রিজার্ভের বৈঠক, পাওয়েলের বক্তব্য এবং "ডট প্লট" চার্ট মার্কেটে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শুন পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।